Skip to content

শাহনেওয়াজ-গিয়াসের নেতৃত্বে নায়াগ্রা ফলসে ফোবানা সম্মেলন ২৯-৩১ আগস্ট

৩৯তম ফোবানা সম্মেলনের একাংশের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ অন্য সকল পক্ষের প্রতি উদাত্ত জানিয়ে বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে দলমতের উর্ধ্বে ওঠে সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে এক ফোবানার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

‘প্রবাসী নতুন প্রজন্মই হোক আগামী শক্তি’- স্লোগানে আগামী ২৯ থেকে ৩১ আগস্ট তিনদিনব্যাপী এবারের ফোবানা সম্মেলন বাফেলোর নায়াগ্রা ফলসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শাহনেওয়াজ আরো বলেন, ফোবানা যে লক্ষ্যে সৃষ্টি হয়েছিল সেটি বাস্তবায়নে আসুন নিজেদের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে অনন্য এক উদাহরণ তৈরি করি। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি ছিল, তার অবসান হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বাধীন ফোবানার কর্মকর্তারা ঘোষণা দিয়ে বলেন, উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসীদের স্বপ্ন পূরণের স্বার্থেই ঐক্যের বিকল্প ছিল না। ১৬ জুন সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে নবান্ন পার্টি হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো জানানো হয় যে, ববিশ্বখ্যাত নায়েগ্রা ফলস এলাকার বিলাসবহুল একটি ভেন্যুতে ফোবানা সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। সম্মেলনে স্লোগানের পরিপূরক হিসেবে প্রবাসের নতুন প্রজন্মকে কীভাবে ফোবানার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি ও দায়িত্ব দেয়া যায় সেসব বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।

fbbf6d15 5843 435d bb47 252a0258d504

বিষয়ভিত্তিক ইস্যুতে সেমিনার-সিম্পোয়িাম ছাড়াও বাংলাদেশ এবং প্রবাসী শিল্পীদের নিয়ে একটি নান্দনিক অনুষ্ঠান উপহার দেয়া হবে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে জানানো হয় যে, ‘ফোবানার আরো দুটি গ্রুপ রয়েছে, যারা জর্জিয়ার আটলান্টা এবং কানাডার মন্ট্রিয়লে একইসময়ে সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের সাথেও যোগাযোগ হচ্ছে। ঐক্যের প্রক্রিয়া এবার ফলপ্রসূ না হলেও পরবর্তীতে তা হবে ইনশাআল্লাহ। এ ব্যাপারে আমরা আশাবাদি।’

উল্লেখ্য, বেশ ক’বছর ধরেই ফোবানার ঐক্যের আশাবাদ পোষণ করা হলেও সময়ের ব্যবধানে তা ৪ খণ্ডে বিভক্ত হয়েছিল। গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বাধীন ফোবানা শাহনেওয়াজের গ্রুপের সাথে একিভূত হওয়ায় এখন তা ৩ গ্রুপে পরিণত হলো। কানাডার মন্ট্রিয়ল গ্রুপের চেয়ারপার্সন আতিকুর রহমানের সাথে সর্বশেষ এই ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছেন, শাহনেওয়াজের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি কাজী আজমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে কম্যুনিটির ঐক্য প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা প্রত্যাশা এবং প্রবাস প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে রাখার পাশাপাশি মাতৃভূমির কল্যাণে নিবেদিত থাকার সংকল্প ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন গিয়াস আহমেদ, মোহাম্মদ হোসেন খান, হাসানুজ্জামান হাসান, জুবায়ের দারা, ফাহাদ সোলায়মান এবং মইনুল হক চৌধুরী হেলাল।

এ সময় মঞ্চে আরো ছিলেন ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান আলী ইমাম, খন্দকার ফরহাদ, নিশান রহিম, মো. এলিন, সাহাবউদ্দিন সাগর। গিয়াস আহমেদ এবং ফাহাদ সোলায়মান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান যে, কানাডা এবং আমেরিকার মূলধারার রাজনীতি ও প্রশাসনে বিশেষ অবস্থায় উন্নীত প্রবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

মোহাম্মদ হোসেন খান এবং কাজী আজম জানান, নতুন প্রজন্মের সম্পৃক্ততা জোরালো করা হচ্ছে। কারণ, তারাই বাংলাদেশ ও বাঙালি সংস্কৃতিতে বহুজাতিক এ সমাজে লালন করবেন। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ‘ফোবানা’ প্রবাসের একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন। উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের বৃহত্তম একটি সংগঠন। এটি মূলত: যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও কানাডা থেকে পরিচালিত বাংলাদেশি সংগঠনগুলোর একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম। ১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রথম সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফোবানার যাত্রা শুরু হয়। ফোবানার মূল লক্ষ্য ছিলোÑ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি, বাংলাদেশি সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরা এবং এর প্রচার ও প্রসার, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রবাসীদের জীবন-যাত্রার মানউন্নয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে সেতুবন্ধন রচনা করা।

আরো উল্লেখ করা হয়, আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এবারের সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি, সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন রচনার জোর প্রয়াস থাকবে। আমরা মনে করি এবারের ফোবানা সম্মেলন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের জন্য একটি মিলনমেলা এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেবে। বাংলাদেশের কৃষ্টি, কালচার, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সৃজনশীলতাকেও এবারের সম্মেলনে প্রাধান্য দেয়া হবে।

আমরা প্রবাসীদের নিয়ে বিজনেজ নেটওয়ার্ক তৈরি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, বিজনেস লাঞ্চ, বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, কৃষ্টি, ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন আসর, ইয়ুথ গ্রুপের কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ের ওপর অগ্রাধিকার দেবো।

এবারেও ফোবানার কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশ করা হবে একটি ম্যাগাজিন বা স্মরণিকা। আমরা আশা রাখি এবারের সম্মেলন দল-মতের উর্ধ্বে থেকে বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ঐক্যের শক্তিকে জোরালো করবে। প্রবাসীরা যাতে ফেলে আসা বাংলাদেশকে খুঁজে পায়- সে চেষ্টা থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *